খেলার মাঠে হরহামেশাই ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে । কিছু ভুল হয় হাস্যকর , কিছু কষ্টের । কিছু ভুল আর কিছুই না কেবলি একটা ভুল । খেলার মাঠের কিছু ভুলের কথা থাকল এখানে ।
দিকের ভুল
১৯২৯ সালের এক রাগবি ম্যাচের কথা । কাল'স রয়ের উপর সেদিন কোন ভুত চেপেছিল কে জানে ? ম্যাচের বলদখলের লড়াইয়ে আক্সমিক বল পেয়ে রুদ্ধশ্বাস দৌড় শুরু করলেন । আজকে আর তার গোল করা ঠেকায় কে ? বিনা বাধায় ৬৫ গজ এগিয়ে যাওয়ার পর নিজেও কিছুটা অবাক হয়েছিলেন । এত সহজে গোল দেয়ার সুযোগ কয়জনার ভাগ্যে জোটে ? তবে শেষমেষ আর গোল দেয়া হয় নি রয়ের । গোল লাইনের সামান্য আগে তার দলের সতীর্থরাই টেনে ঝাপ্টে ধরে থামিয়ে দিলেন তাঁকে । কারন ? প্রতিপক্ষের সীমানা ভেবে নিজেদের গোল লাইনের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন রয় ।
হিসেবের গড়মিল
ক্রিকেটে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি নিয়ে মাঝে মাঝে রসিকতা করে বলা হয়, এর আবিস্কারক দুই ইংরেজ ভদ্রলোক ডাকওয়ার্থ আর লুইস সাহেব নিজেরাও নাকি তাদের এই পদ্ধতিটা ঠিক বোঝেন না ! তবে দক্ষিন আফ্রিকা দলের কিন্তু একবার সত্যি সত্যি ভুল হয়ে গেল । ২০০৩ বিশ্বকাপে 'ডু ওর ডাই' ম্যাচে রান তাড়া করে খেলছিল প্রোটিয়াসরা । বৃষ্টির আনাগোনায় খেলার ফলাফল ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে গড়াতে পারে ধারনা করে ড্রেসিংরুম থেকে ব্যাটসম্যানদের উদ্যেশ্যে এক জরুরী বার্তা পাঠানো হল । আর কোন উইকেট না হারিয়ে ৪৫ ওভার শেষে দলের রান যদি ২২৯ এ থাকে তাহলে বৃষ্টি আইনে জিতে পরের রাউন্ডে চলে যাবে দক্ষিন আফ্রিকা । ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যান অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করলেন । ৪৫ ওভার হওয়ার একবল বাকি থাকতে ২২৯ রান সংগ্রহ করে শেষ বলে আর রানের ঝুকি নিলেন না তারা । বৃষ্টিতে খেলা সত্যি সত্যি বন্ধ হয়ে গেলে জানা গেল হিসাবে বড্ড বড় এক ভুল করে ফেলেছে দক্ষিন আফ্রিকা । ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে জিততে ২২৯ নয় প্রয়োজন ছিল ২৩০ রান । ভুলের খেসারত হিসেবে আরও একবার বিশ্বকাপ থেকে দুর্ভাগ্যজনক বিদায় দক্ষিন আফ্রিকার ।
আম্পায়ারের ভুল
১৯৪৬ সাল । তখন ক্রিকেটে ৮ বলে ওভার গননা করা হত । তবে বারবাডোজ আর ব্রিটিশ গায়ানার মধ্যকার ম্যাচে একটা ওভার ছিল ১৪ বলের । ভাবছেন বাড়তি ছয় বল ওয়াইড নো বলের কারনে ? ভাবলে ভুল, আসল ঘটনা হচ্ছে ভুলোমনা আম্পয়ার ভুলে গিয়েছিলেন বলের হিসেব রাখতে !
সংবাদের ভুল
নিজেদের নিয়ে ইংলিশ মিডিয়ার দম্ভটা বরাবরি ঈর্ষনীয় পর্যায়ের । তার একটা বড় খেসারত তাদের দিতে হয়েছে ১৯৫০ এর ফুটবল বিশ্বকাপে । ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত সে আসরের অন্যতম ফেভারিট দল ছিল ইংল্যান্ড আর সে তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র দুধের শিশু । দু দলের মুখোমুখি ম্যাচের আগে জয়ের ব্যাপারটা ‘অগ্রিম’ ধরেই নিয়েছিল ইংলিশরা । তাদের ভাগ্য খারাপ , সেদিন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম বড় এক অঘটন ঘটিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র । ম্যাচ জিতলো ১-০ গোলে । তখনকার যুগে তো আর মোবাইল-ইন্টারনেট ছিল না । ব্রাজিল থেকে খেলার স্কোর পাঠানো হল টেলিগ্রাম করে , আর সেই টেলিগ্রাম পেয়ে ইংলিশদের চক্ষু ছানাবড়া । সাংবাদিকরা ভাবলেন ‘অসম্ভব, নিশ্চয়ই টেলিগ্রাম লেখায় ভুল হয়েছে । স্কোর হবে আসলে ইংল্যান্ড ১১ – ০ যুক্তরাষ্ট্র । ভুল ভাঙার পর নিশ্চয়ই ভীষণ লজ্জায় পড়তে হয়েছিল তাদের ।
বেচারা হ্যামিল্টন !
১৯৩৬ এর অলিম্পিক । দক্ষিন আফ্রিকার বক্সার হ্যামিল্টন হেরে গেলেন প্রথম রাউন্ডেই । হারার ক্ষোভটা মেটাতেই বোধয় সেদিন পেটপুরে খাওয়া দাওয়া করলেন । পরদিন জানানো হল , ম্যাচের স্কোরিং এ ভুল হয়েছে , বিজয়ী আসলে হ্যামিল্টনই । তবে এমন সুখবরের হাসি মুখে বেশিক্ষন টিকলো না তার । কারন পরবর্তী রাউন্ডে খেলার অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হল তাকে । কেন ? ওই একদিনের খাবারেই হ্যামিল্টনের ওজন বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ৫ পাউন্ড । ওজনভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় বাড়তি ওজনই শেষমেষ কাল হল । বেচারা হ্যামিল্টন !
সিদ্ধান্তের ভুল
১৯৯২ সালের বার্সেলোনা অলিম্পিকে পোল ভোল্ট ইভেন্টে ড্যান ও ব্র্যাইনের সামনে সুযোগটা ছিল খুব সহজ । পরবর্তী রাউন্ডে প্রতিযোগিতা করতে হলে যে কোন উচ্চতার বাধা পেরলেই হবে । তারপরেও মার্কিন এই অ্যাথল্যাট সিদ্ধান্ত নিলেন ১৫ ফুট ৯ ইঞ্চি বাধা টপকাবেন তিনি । ফলাফল ? তিনবারের প্রচেষ্টায় তিনবারই ব্যর্থ হয়ে বাদ পড়লেন প্রতিযোগিতা থেকে । এজন্যই বলা হয় ‘ভাবিয়া করিয় কাজ’ ।
ভুল হিসাব
এবারের ভুলের ঘটনা বেসবলের মাঠে । মিল্টন ব্রেডলি , ল্যারি ওয়াকার , ট্রট নিক্সন আর ডেমন হলিন্স চারজন মিলে একি সাথে সহজতম এক হিসেবে ভুল করে ফেলেছিলেন । তারা ভুলে গিয়েছিয়েন ইনিংসে তাদের আউটের সংখ্যা ! বেসবলের ইতিহাসে যা কিনা এখন পর্যন্ত অন্যতম বিব্রতকর মুহূর্ত।
ব্যায়বহুল ভুল
২০১০ এর শীতকালীন অলিম্পিক । ডাচ এথল্যাট ক্র্যামার ১০ হাজার মিটারের রেস জিতলেন রেকর্ড টাইমিং গড়ে । রেস জেতার আনন্দ-উচ্ছ্বাসটা বেশিক্ষন স্থায়ী হলনা ক্র্যামারের । সোনার পদক পেয়েও কেড়ে নেওয়া হল তা । কেন ? কারন মস্ত বড় এক ভুল করেছেন ক্র্যামার । মধ্যে লেন পরিবর্তন করে ফেলেছেন তিনি । এমন ভুলের কারনে সোনার পদক আর পাঁচ লাখ ইউএস ডলার দুইটাই বেড়িয়ে গেল হাত ফসকে । এবারের ভুলটা বড্ড ব্যয়বহুল ।
(সংযোজন চলবে)
দিকের ভুল
১৯২৯ সালের এক রাগবি ম্যাচের কথা । কাল'স রয়ের উপর সেদিন কোন ভুত চেপেছিল কে জানে ? ম্যাচের বলদখলের লড়াইয়ে আক্সমিক বল পেয়ে রুদ্ধশ্বাস দৌড় শুরু করলেন । আজকে আর তার গোল করা ঠেকায় কে ? বিনা বাধায় ৬৫ গজ এগিয়ে যাওয়ার পর নিজেও কিছুটা অবাক হয়েছিলেন । এত সহজে গোল দেয়ার সুযোগ কয়জনার ভাগ্যে জোটে ? তবে শেষমেষ আর গোল দেয়া হয় নি রয়ের । গোল লাইনের সামান্য আগে তার দলের সতীর্থরাই টেনে ঝাপ্টে ধরে থামিয়ে দিলেন তাঁকে । কারন ? প্রতিপক্ষের সীমানা ভেবে নিজেদের গোল লাইনের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন রয় ।
হিসেবের গড়মিল
ক্রিকেটে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি নিয়ে মাঝে মাঝে রসিকতা করে বলা হয়, এর আবিস্কারক দুই ইংরেজ ভদ্রলোক ডাকওয়ার্থ আর লুইস সাহেব নিজেরাও নাকি তাদের এই পদ্ধতিটা ঠিক বোঝেন না ! তবে দক্ষিন আফ্রিকা দলের কিন্তু একবার সত্যি সত্যি ভুল হয়ে গেল । ২০০৩ বিশ্বকাপে 'ডু ওর ডাই' ম্যাচে রান তাড়া করে খেলছিল প্রোটিয়াসরা । বৃষ্টির আনাগোনায় খেলার ফলাফল ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে গড়াতে পারে ধারনা করে ড্রেসিংরুম থেকে ব্যাটসম্যানদের উদ্যেশ্যে এক জরুরী বার্তা পাঠানো হল । আর কোন উইকেট না হারিয়ে ৪৫ ওভার শেষে দলের রান যদি ২২৯ এ থাকে তাহলে বৃষ্টি আইনে জিতে পরের রাউন্ডে চলে যাবে দক্ষিন আফ্রিকা । ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যান অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করলেন । ৪৫ ওভার হওয়ার একবল বাকি থাকতে ২২৯ রান সংগ্রহ করে শেষ বলে আর রানের ঝুকি নিলেন না তারা । বৃষ্টিতে খেলা সত্যি সত্যি বন্ধ হয়ে গেলে জানা গেল হিসাবে বড্ড বড় এক ভুল করে ফেলেছে দক্ষিন আফ্রিকা । ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে জিততে ২২৯ নয় প্রয়োজন ছিল ২৩০ রান । ভুলের খেসারত হিসেবে আরও একবার বিশ্বকাপ থেকে দুর্ভাগ্যজনক বিদায় দক্ষিন আফ্রিকার ।
আম্পায়ারের ভুল
১৯৪৬ সাল । তখন ক্রিকেটে ৮ বলে ওভার গননা করা হত । তবে বারবাডোজ আর ব্রিটিশ গায়ানার মধ্যকার ম্যাচে একটা ওভার ছিল ১৪ বলের । ভাবছেন বাড়তি ছয় বল ওয়াইড নো বলের কারনে ? ভাবলে ভুল, আসল ঘটনা হচ্ছে ভুলোমনা আম্পয়ার ভুলে গিয়েছিলেন বলের হিসেব রাখতে !
সংবাদের ভুল
নিজেদের নিয়ে ইংলিশ মিডিয়ার দম্ভটা বরাবরি ঈর্ষনীয় পর্যায়ের । তার একটা বড় খেসারত তাদের দিতে হয়েছে ১৯৫০ এর ফুটবল বিশ্বকাপে । ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত সে আসরের অন্যতম ফেভারিট দল ছিল ইংল্যান্ড আর সে তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র দুধের শিশু । দু দলের মুখোমুখি ম্যাচের আগে জয়ের ব্যাপারটা ‘অগ্রিম’ ধরেই নিয়েছিল ইংলিশরা । তাদের ভাগ্য খারাপ , সেদিন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম বড় এক অঘটন ঘটিয়ে দিল যুক্তরাষ্ট্র । ম্যাচ জিতলো ১-০ গোলে । তখনকার যুগে তো আর মোবাইল-ইন্টারনেট ছিল না । ব্রাজিল থেকে খেলার স্কোর পাঠানো হল টেলিগ্রাম করে , আর সেই টেলিগ্রাম পেয়ে ইংলিশদের চক্ষু ছানাবড়া । সাংবাদিকরা ভাবলেন ‘অসম্ভব, নিশ্চয়ই টেলিগ্রাম লেখায় ভুল হয়েছে । স্কোর হবে আসলে ইংল্যান্ড ১১ – ০ যুক্তরাষ্ট্র । ভুল ভাঙার পর নিশ্চয়ই ভীষণ লজ্জায় পড়তে হয়েছিল তাদের ।
বেচারা হ্যামিল্টন !
১৯৩৬ এর অলিম্পিক । দক্ষিন আফ্রিকার বক্সার হ্যামিল্টন হেরে গেলেন প্রথম রাউন্ডেই । হারার ক্ষোভটা মেটাতেই বোধয় সেদিন পেটপুরে খাওয়া দাওয়া করলেন । পরদিন জানানো হল , ম্যাচের স্কোরিং এ ভুল হয়েছে , বিজয়ী আসলে হ্যামিল্টনই । তবে এমন সুখবরের হাসি মুখে বেশিক্ষন টিকলো না তার । কারন পরবর্তী রাউন্ডে খেলার অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হল তাকে । কেন ? ওই একদিনের খাবারেই হ্যামিল্টনের ওজন বেড়ে গিয়েছিল প্রায় ৫ পাউন্ড । ওজনভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় বাড়তি ওজনই শেষমেষ কাল হল । বেচারা হ্যামিল্টন !
সিদ্ধান্তের ভুল
১৯৯২ সালের বার্সেলোনা অলিম্পিকে পোল ভোল্ট ইভেন্টে ড্যান ও ব্র্যাইনের সামনে সুযোগটা ছিল খুব সহজ । পরবর্তী রাউন্ডে প্রতিযোগিতা করতে হলে যে কোন উচ্চতার বাধা পেরলেই হবে । তারপরেও মার্কিন এই অ্যাথল্যাট সিদ্ধান্ত নিলেন ১৫ ফুট ৯ ইঞ্চি বাধা টপকাবেন তিনি । ফলাফল ? তিনবারের প্রচেষ্টায় তিনবারই ব্যর্থ হয়ে বাদ পড়লেন প্রতিযোগিতা থেকে । এজন্যই বলা হয় ‘ভাবিয়া করিয় কাজ’ ।
ভুল হিসাব
এবারের ভুলের ঘটনা বেসবলের মাঠে । মিল্টন ব্রেডলি , ল্যারি ওয়াকার , ট্রট নিক্সন আর ডেমন হলিন্স চারজন মিলে একি সাথে সহজতম এক হিসেবে ভুল করে ফেলেছিলেন । তারা ভুলে গিয়েছিয়েন ইনিংসে তাদের আউটের সংখ্যা ! বেসবলের ইতিহাসে যা কিনা এখন পর্যন্ত অন্যতম বিব্রতকর মুহূর্ত।
ব্যায়বহুল ভুল
২০১০ এর শীতকালীন অলিম্পিক । ডাচ এথল্যাট ক্র্যামার ১০ হাজার মিটারের রেস জিতলেন রেকর্ড টাইমিং গড়ে । রেস জেতার আনন্দ-উচ্ছ্বাসটা বেশিক্ষন স্থায়ী হলনা ক্র্যামারের । সোনার পদক পেয়েও কেড়ে নেওয়া হল তা । কেন ? কারন মস্ত বড় এক ভুল করেছেন ক্র্যামার । মধ্যে লেন পরিবর্তন করে ফেলেছেন তিনি । এমন ভুলের কারনে সোনার পদক আর পাঁচ লাখ ইউএস ডলার দুইটাই বেড়িয়ে গেল হাত ফসকে । এবারের ভুলটা বড্ড ব্যয়বহুল ।
(সংযোজন চলবে)